1. [email protected] : Shafiqul Alam : Shafiqul Alam
  2. [email protected] : aminul :
  3. [email protected] : Bayezid :
June 6, 2023, 11:46 pm
শিরোনাম :
পঞ্চগড় জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ মালিক সমিতির নব নির্বাচিত কমিটির দ্বায়িত্ব গ্রহণ ও সংবর্ধনা প্রদান কৃষি কাজে অত্যধিক সার ব্যবহৃত হচ্ছে পঞ্চগড়ে পরিবেশ দিবসের আলোচনায় বক্তারা পঞ্চগড়ে নবাগত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা পঞ্চগড়ে বিএসটিআই’র অভিযানে ফিলিং স্টেশন বন্ধ স্মার্ট ভূমি সেবা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে পঞ্চগড়ে নামজারি ও হোল্ডিং এন্ট্রি বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তিন ব্যক্তিকে সাত দিন করে কারাদণ্ড পঞ্চগড়ে অজ্ঞান পার্টি চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার পঞ্চগড়ে ৫ দিনের বিজ্ঞ পাখি মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত পঞ্চগড়ে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক অনুষ্ঠান উপলক্ষে রক্তদান ও চিকিৎসা ক্যাম্প পঞ্চগড়ে রাতের আধারে মন্দির ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ

তরুণদের আইডল সোলায়মান সুখন

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, November 21, 2017
  • 1267 Time View
ফাইল ছবি

পুরো নাম খন্দকার মোহাম্মদ সোলায়মান হলেও তিনি ‘সোলায়মান সুখন’ নামেই পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লাখ লাখ মানুষের উৎসাহদাতা। তরুণ প্রজন্মের কাছে আইডল। জীবন সংগ্রামের ভাঙা-গড়ার অভিজ্ঞতার গল্প শুনিয়ে প্রেরণা জোগান। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে তৈরি করেন জনসচেতনতা। শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নয়; বিভিন্ন সেমিনার ও জাতীয় অনুষ্ঠানে কথার জাদু ছড়িয়ে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা সুখন জাগো নিউজকে শুনিয়েছেন আজকের সোলায়মান সুখন হয়ে ওঠার গল্প।

শুরুর গল্প
১৯৮০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর সেনানিবাসে জন্ম সোলায়মান সুখনের। বাবা আব্দুল ওয়াদুদ সাবেক সেনা সদস্য আর মা সামসুন নাহার খন্দকার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ছেলেবেলায় ঈদের সময় তিন ভাই-বোনের জন্য আলাদা করে নতুন জামা-কাপড় কেনা হতো না। কারো জন্য জামা আর কারো জন্য প্যান্ট। এমন মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা সুখনের। শিক্ষা জীবন শুরু হয়েছিল মায়ের হাতে আঁকা বই দিয়ে। স্কুলে ভর্তির পর বইয়ের সংকট থাকায় মা নিজের হাতে এঁকে এঁকে তৈরি করে দিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণির আমার বাংলা বই। সেই ভিন্নধর্মী বই নিয়ে তখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল বন্ধুরাও। বাবার চাকরিসূত্রে বিভিন্ন স্কুলে পড়ালেখা করতে হয়েছে সুখনের। জালালাবাদ সেনানিবাস উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু হয় শিক্ষা জীবন। এরপর বিভিন্ন স্কুল পেরিয়ে ১৯৯৫ সালে মুসলিম মডার্ন একাডেমি থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি থেকে কমিশন প্রাপ্ত হন। এরপর চাকরি ছেড়ে বন্ধুর পরামর্শে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ)। ২০০৫ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর চাকরি করেছেন দেশের নামিদামি সব কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে।

 

এগিয়ে চলা
বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির চাকরি ছেড়ে সুখন যখন ঢাকায় পা রেখেছিলেন তখন ভাড়া দেওয়ার পর পকেটে অবশিষ্ট ছিলো মাত্র ৭শ’ টাকা। পকেটে টাকা না থাকলেও বুক পকেটে ছিলো স্বপ্ন। ঢাকায় এসে বন্ধুর সাথে থাকা শুরু করেছিলেন বুয়েটের হোস্টেলে। বন্ধুর পরামর্শে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। পড়াশোনা শেষ করে যোগ দিয়েছিলেন নিজের স্বপ্নের চাকরিতে। ছোটবেলার দুষ্টু সেই মেধাবী সুখন কর্মজীবনেও সফল। এত সফলতার মাঝেও তিনি আজ জনপ্রিয় ভিন্ন কারণে। জনপ্রিয়তার কারণ তার কথার জাদু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যোগ দিয়েছিলেন ২০০৮ সালে। প্রথমে ব্যক্তিগত জীবন ও হাসির ভিডিও আপলোড করতেন। দেখলেন এসব ভিডিওতে সাড়া পাচ্ছেন। তারপর শুরু করলেন ফোন বা নতুন ডিভাইসের রিভিউ করা।এসবের মাঝে তিনি ভেবে দেখলেন, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন। তিনি লক্ষ্য করলেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে। তিনি তখন ফেসবুকে অনন্ত জলিলের পক্ষে নিজের মতামত তুলে ধরেন। যা সেইসময় ফেসবুকে ব্যাপক সাড়া পায়। তার আগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তার দেওয়া বক্তব্যও ফেসবুকে তুমুল সাড়া ফেলে। সেই থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে চলেছেন সুখন।

অন্তর্জালে সাম্রাজ্য
ফেসবুকে সমসাময়িক অনুপ্রেরণামূলক স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও পোস্ট করার কারণে ইতোমধ্যেই তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছেন সুখন। তিনি বলেন, ‘আমি নিয়ম মেনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও পোস্ট করি। এ কারণে আমার পোস্টে ব্যবহারকারীরা লাইক দেয়। আর এই লাইক হয়তো আমাকে ফেসবুকে বিখ্যাত করেছে। কিন্তু যারা লাইক দিচ্ছেন তারা যদি আমার লেখাগুলো বা আমি কী বোঝাতে চেয়েছি তা বুঝে নেন, নিয়মগুলো মেনে চলেন তাহলে তারাও নিজের জীবন পরিবর্তন করে উন্নতি করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’ এভাবেই জোগাচ্ছেন তারুণ্যের অনুপ্রেরণা। তার কথার জাদুতেই কোন তারকা না হয়েও তিনি ফেসবুকের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব।রয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৪১ হাজারেও বেশি ফলোয়ার। এছাড়া ২০০৯ সালে ইউটিউবে যোগ দেওয়া সুখনের এসব অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে দেখা হয়েছে ২ কোটি মিনিটের বেশি।

 

আন্তর্জাতিক অঙ্গন
শুধু ইন্টারনেট দুনিয়ায় থেমে নেই সুখন। জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে কথার জাদু ছড়িয়ে সাড়া ফেলেছেন সুখন।এ পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনারে বক্তব্য রেখেছেন সুখন। তিনি বলেন, ‘আমি কোন সুদর্শন ব্যক্তি না, কোন তারকা না, তবুও এ পর্যন্ত আমি যতগুলো অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছি এটা দেখে অবাক হয়েছি- সামনের কোন চেয়ার খালি ছিলো না।’ কিভাবে এই কথার জাদু শিখলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সুখন বলেন, ‘ছোটবেলায় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিদের সরাসরি বক্তব্য দেওয়া শুনে খুব ইচ্ছে হতো, আমি যদি এমন বক্তব্য দিতে পারতাম। এরপর সরাসরি মানুষের সাথে কথা বলার প্রযুক্তি আসলো হাতের কাছে। সেখান থেকে শুরু। এছাড়া আমি ছোট থেকে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি নিউজের হেডলাইন পড়তাম, সেখান থেকে আমি সমসাময়িক কোন ব্যাপারে কথা বলা যায় সেটা ঠিক করতাম। আর যারা বক্তব্য দেয় তারা কিভাবে কথা বলে, কথা বলার সময় তাদের শারীরিক ভাষা খেয়াল করতাম।’ নিজের জনপ্রিয়তার কারণও জানালেন তিনি, ‘আমাদের দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা যতটা জরুরি তার চেয়ে মত প্রকাশের শালীনতা রাখা জরুরি। সেটার চেষ্টা করেছি, তাই মানুষ পজেটিভভাবে নিয়েছে।’

সুখনের প্রিয়
কথার জাদুকর সুখনেরও রয়েছে প্রিয় বক্তা। ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের বক্তব্য তার ভালো লাগে। এছাড়া স্যার রিচার্ড ব্রানসন রয়েছেন তার প্রিয় বক্তার তালিকায়। জনপ্রিয় হওয়ার আগে স্যার রিচার্ড ব্রানসনকে টুইট করেছিলেন তিনি। সুখনের কথার জাদুতে মুগ্ধ হয়ে রি-টুইটও করেছিলেন স্যার রিচার্ড ব্রানসন। সুখনের প্রিয় বন্ধুর তালিকা অনেক বড় হলেও সেই তালিকায় অন্যতম হচ্ছেন সেনা কর্মকর্তা রাশিদ। প্রিয় খাবার গরুর মাংস ভুনা, প্রিয় রং কালো। ঘুরতে পছন্দ করেন পাহাড়ি এলাকায়।

 

স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান
একদিন রেস্টুরেন্টে বসে দেখলেন কমেডি ক্লাবের নাভিদ মাহবুব একটি পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। সে সময় পাশের সিটে বসা নাভিদের কথাগুলো সুখনের মনে ধরে। সে সময় নাভিদ মাহবুবকে জানালেন তার আগ্রহের কথা। নাভিদ মাহবুব একদিন দাওয়াত দিলেন তার ক্লাবে। সেই থেকে শুরু। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে নিজেকে আর স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে পরিচয় দেন না সুখন। কারণ হিসেবে বললেন, ‘স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হতে গেলে একজন মানুষের প্রচুর জ্ঞান থাকা লাগে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ এখনো এটাকে কৌতুক মনে করে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি সেটা বোঝানোর; কিন্তু বলতে গেলে এককথায় বাধ্য হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছি।’

 

সুখনের ভবিষ্যত
সোলায়মান সুখন মনে করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দিয়ে পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাই নিজেকে মেলে ধরতে চান বিশ্বজুড়ে। এখন শুধু বাংলায় নিজের দেশের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বললেও ভবিষ্যতের ইংরেজিতে বিশ্বের সমসাময়িক বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে চান। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছেন সুখন। বলছিলেন, ‘আমি কখনো স্বপ্ন দেখে বসে থাকি না। সেই স্বপ্ন যতক্ষণ পূরণ না হয়, তার পেছনে লেগে থাকি- দৌড়ে বেড়াই।’ সোলায়মান সুখন যুক্ত ছিলেন মৃত ঘোষণার পর কেঁদে ওঠা শিশু গালিবাকে ঢাকায় এনে বাঁচিয়ে তোলার শেষ প্রচেষ্টায়। এছাড়া যুক্ত আছেন বিভিন্ন সামাজিক কাজে। এভাবে নিজের সেরাটা দিয়ে তরুণদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে চান।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | PanchagarhNews.com পঞ্চগড়ে প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল
Tech supported by Amar Uddog Limited

You cannot copy content of this page