
পঞ্চগড় প্রতিনিধি।।
পঞ্চগড়ে উদ্ধার হওয়া সেই শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। মো. সানি নামে আট বছরের ওই শিশুকে রবিবার তার মায়ের কাছে তুলে দেন পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। ৫ জুন ঢাকা থেকে ভুল করে পঞ্চগড়ে চলে আসে ওই শিশু।
পুলিশ জানায়, গত ৫ জুন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজার থেকে সানি নামের ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে ওই দিন ঢাকা থেকে ট্রেনে করে পঞ্চগড় আসে। সেখান থেকে ইজিবাইকে করে তেঁতুলিয়ার দিকে রওনা হয়। কিন্তু ঠিকানা ভালভাবে বলতে না পাড়ায় ইজিবাইক চালক শিশুটিকে নিয়ে ভজনপুর পৌছে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি জানায় ‘তার নাম সানি। বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম, মায়ের নাম সাথী আক্তার। বাবা জাহাঙ্গীর লেগুনা চালক।’ এইটুকু বলতে পারে শিশুটি। কিন্তু সে তার ঠিকানা কোন মতেই বলতে পারছিল না।
পরে জেলা পুলিশ শিশুটির ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচার চালায়। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী নিজেও বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেন। পরদিন শিশুটির বাবা মায়ের খোঁজ পান। শিশুটির বাড়ি ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায়। পরে তার পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে তা নিশ্চিত করা হয়। খবর পেয়ে শিশুটির মা সাথী আক্তারকে পঞ্চগড়ে আসার ব্যবস্থা করে পুলিশ।

রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে শিশুটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। শিশুটি মায়ের কোল ফিরে পেয়ে উচ্চসিত। ছেলেকে ফিরে পেয়ে মায়ের মুখেও হাসি ফুটে। তারা পুলিশের এই সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে আবার পুলিশের সহযোগিতায় তাদের ঢাকায় ফিরে যাওয়ার বন্দবস্ত করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, শিশুটি কমলাপুর রেললাইনের কাছের আবাসিক মাদরাসায় পড়তো। আবদ্ধ পরিবেশে তার ভাল লাগতো না। পরে সে হেঁটে হেঁটে কমলাপুরে আসে এবং ট্রেনে চড়ে বসে। ট্রেন তাকে পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে নামিয়ে দেয়। নিজের অজান্তেই শিশুটি ট্রেনে করে চলে আসে। সেখান থেকে ইজিবাইকে করে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঠিকানা ঠিকমতো বলতে না পাড়ায় ওই ইজিবাইক চালক পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে। আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে তার পরিচয় বের করি এবং তার মা এসে শিশুটিকে নিয়ে গেছেন। আমাদের কাজ এভাবেই মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো। এখানে বড় করে কিছু বলার নেই।।