পঞ্চগড় অফিস
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এর উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী,আনন্দ আড্ডা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল ৩০জুন (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে পতাকা ও পায়রা উড়িয়ে উক্ত অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন উক্ত সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ও বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রমনীকান্ত রায়।এছাড়া উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ও প্রথম প্রধান শিক্ষক মুরাদ আলী,প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম, প্রাক্তন শিক্ষক সুবাস চন্দ্র রায়,জনাব আলী, সোনারায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ওয়ালিয়ার রহমান,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল হক চৌধুরী,সোনারায় ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম ফিরোজ চৌধুরী,ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য তৈয়বর রহমান ও বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্কুলজীবনের হারিয়ে যাওয়া পথগুলো ফের যেন পুরোনো মোহনায় ফিরেছিল শুক্রবার।
বহুদিন পর সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় এসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা যেন ফিরে গিয়েছিলেন সেই সোনালী দিনগুলোতে।উপলক্ষ একটাই-বিদ্যালয়ের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।
ভবিষ্যতের টানে পৃথক হয়ে গিয়েছিল তাদের গন্তব্য। বন্ধুর সঙ্গে ‘দেখা-দেখি’টা কারও কারও জীবনে সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের পর্দাতেই। কারও তো আবার-স্কুল জীবনের শেষ দিনে পথটা যে ভাগ হয়ে গিয়েছিল তারপর আর মুখ দেখাদেখিই হয়নি। সেই সমস্ত হারিয়ে যাওয়া পথগুলো ফের পুরোনো মোহনায় ফিরেছিল শুক্রবারে।
পুনর্মিলনী উপলক্ষে ওইদিন দুপুর থেকেই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ভিড় করতে থাকেন প্রাক্তন আর বর্তমান ছাত্রীরা। প্রাক্তন ছাত্রীদের অনেকেই বর্তমানে দেশের বহু জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। তারা তাদের পরিবার নিয়ে অংশ নেন পুনর্মিলনীতে। সেই সাবেকরা যেন খুঁজে ফিরছিলেন তাদের স্কুল জীবনের সেইসব স্বর্ণময় দিনগুলো। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই ভিড়-বুনো উল্লাস। সেকেন্ডেরও ভগ্নাংশে চলছে ক্লিক ক্লিক, দেদারসে উঠছে সেলফি-ছবি। পেছনের দৃশ্যপটে কোথাও বিদ্যালয় তো, কোথাও আবার মঞ্চস্থল। ফেলে আসা ক্লাসরুম, শিক্ষক আর হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা মিলে হুড়মুড়িয়ে বইতে থাকে গল্পের স্রোত
অনুভূতি প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের ১৯৯৮ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন,সোনারায় হাই স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠন ও উক্ত সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান নিশ্চয়ই একটি অভূতপূর্ব আয়োজন। এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে খুবই ভালো লাগছে। মনে হচ্ছিলো ফিরে গিয়েছি সেই সোনালী কৈশোরে।যে কৈশোর অতিবাহিত করেছি এই প্রাণের বিদ্যাপিঠে।মনে পড়ে যায় হাজারো স্মৃতি আর আবেগ।
‘বন্ধু কী খবর বল, কতদিন পর দেখা,‘এই মাঠেই তো খেলে বেড়াতাম আমরা, আজ চেনায় যায় না’, ‘এটাই না ছিল আমাদের সেই ক্লাসরুমটা, আজ রং লেগেছে তার দেয়ালে দেয়ালে।’এমন হাজারও কথা মুখরিত হয়েছিলো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সবার চোখে ছিলো আনন্দের চাহনি।
বিদ্যালয়টির বয়স হাফ সেঞ্চুরি পার করেছে বহু আগেই।১৯৬৬ সালে জন্ম এই বিদ্যালয়ের। তবে ১৯৭৫ সাল থেকেই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই প্রথমই অনুষ্ঠিত হলো পুনর্মিলনী। তাই উৎসবের মাত্রাটা ছিল একটু বেশিই।পুনর্মিলনী উপলক্ষে স্মৃতিচারন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-আয়োজনে বাকি ছিল না কিছুই।
আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালোমনাই অ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক সাখাওয়াত উল্লাহ সাকু বলেন,উক্ত সংগঠনের উদ্যোগে এটিই প্রথম ঈদ পুনর্মিলনী এবং সংগঠনটির শুভ যাত্রা শুরু করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।সংগঠনের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সকল সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই সফলভাবে উক্ত কর্মসূচি সফল করার জন্য।বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী যারা উক্ত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমণ্ডিত করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্যবৃন্দ, অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ এবং সর্বোপরি সংগঠনের যেসব সহকর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ সহযোগিতায় আজকের এই অনুষ্ঠান সফল হয়েছে তাদের সাধুবাদ জানাই।সোনারায় হাইস্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আরও বহুদূর ছুটে চলুক,এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।
You cannot copy content of this page