বিশেষ প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ও অমরখানা ইউনিয়নের সংযোগস্থল চাওয়াই নদীর উপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি ভেঙে গেছে। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন দুই ইউনিয়নের প্রায় দশ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু গত দুই দিনেও এটি মেরামত না করায় দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় বর্তমানে তাদেরকে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেকে আবার ঝুঁকি নিয়ে এর উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। চলাচলের একমাত্র সাঁকোটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে সাঁকোর খুঁটিতে (লোহার এঙ্গেল) কচুরিপানা জমে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। দুই দিন আগে নদীর পানির গতিতে সাঁকোটি হেলে পড়ে। এতে সাতমেড়া ও অমরখানা ইউনিয়নের আটটি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চাওয়াই নদীর উপর সাঁকো বানিয়ে চলাচল করে এলাকাবাসী। কিন্তু সেটাও ভেঙে পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছে তারা।
সাতমেড়া ও অমরখানা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবিতেও এই নদীতে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়নি। কেউ কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় স্থানীয়রা চাঁদা তুলে প্রথমে বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়। পরে পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান ও আওয়ামী লীগ নেতা নাঈমুজ্জামান মুক্তার সহযোগিতায় কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়।বর্তমানে হেলে পড়া সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছে স্থানীয়রা।
সাতমেরা ইউনিয়নের খইপাড়া গ্রামের অলিয়র রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না। স্বাধীনতার পর থেকে এখানে সরকারিভাবে কোনও প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণে এগিয়ে আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেতু নির্মাণের জন্য বেশ কয়েক বার সাবেক ও বর্তমান সাংসদ, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও কাজ হয়নি। বর্তমানে সাঁকোর অর্ধেক অংশ হেলে পড়ায় আটটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।’
সাতমেরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বসিরুল আলম বলেন, ‘এই সাঁকো দিয়ে আমাদের প্রতিদিন হাট-বাজারে যেতে হয়। পণ্য পরিবহণ করতে হয়। এখন আমাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’
সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান খান জানান, ‘চাওয়াই নদীর এই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, এলজিইডিসহ বিভিন্ন দফতরে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। সাতমেরা ও অমরখানা ইউনিয়নের মানুষের জন্য সেতু নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি। সেতু নির্মাণ না হওয়ায় বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় স্থানীয়রা এখানে প্রথমে বাঁশের ও পরে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু সেটিও ভেঙে পড়ায় মানুষের যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।’
You cannot copy content of this page