পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের সলিম নগর এলাকার আয়নাল হক ও জামিরন বেগম নামে এক দম্পত্তিকে মৌখিক তালাকের জেরে একঘরে করে রাখার ঘটনায় ৯ জন শালিসী ফতোয়াদানকারী গ্রাম্য মাতব্বরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। রবিবার দুপুরে দেবীগঞ্জ-০২ আমলি আদালতের বিচারক এমএম মাহবুব ইসলাম এ গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ জারি করেন।
ওই পরিবারটিকে দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হিল্লা বিয়ে দেওয়ার ফতোয়া প্রদানকারী সমাজপতিরা একঘরে করে রাখে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নেন। আদালত দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন এবং ২২ আগস্টের মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। নির্দেশনা অনুযায়ী দেবীগঞ্জ থানার ওসি মো. জামাল হোসেন গত ২২ আগস্ট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেবীগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক এম এম মাহবুব ইসলাম গত রবিবার সমাজপতি মো. শাহজাহান আলী, মুফতি মো. আনোয়ার হোসেন, মো. নাসির উদ্দীন, মো. আমির চাঁন, মো. শহীদ, মো. ছোরমান আলী, মো. জুলহক, মো. মোস্তফা ও মো. রাসেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনাটি তদন্ত করি। তদন্তে ওই দম্পতিকে একঘরে করে রাখার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। তদন্তে ওই নয় জনের নাম পাওয়া যায়। দেবীগঞ্জ আমলি আদালত সমাজপতিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে বলে শুনেছি। তবে পরোয়ানাটি এখনও আমার কাছে এসে পৌঁছেনি। পরোয়ানা হাতে পেলেই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সরকারি কৌঁসুলি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান এ ঘটনায় নয় জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ফতোয়া প্রদানের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধজ্ঞা রয়েছে। সরকারের আইন অমান্য করে যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় আদালত সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।’
You cannot copy content of this page