স্টাফ রিপোর্টার
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ধান খেত থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের স্বজনদের পরিচয় মিলেছে। গেল কয়েকদিনে ওই এলাকায় সরেজমিনে তদন্ত করে নবজাতকের স্বজনদের পরিচয় বের করতে সক্ষম হয় বোদা থানা পুলিশ। তবে নবজাতক জন্ম দেয়া ওই কিশোরী (১৫) ধর্ষণ হয়েছিলেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। এদিকে ওই কিশোরীর হয়ে বাবা রোববার রাতে বাদী শ্রী ধনেশ (২২) নামে এক তরুণ সহ তার বাবা মায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হুমকী প্রদানের মামলা করেছেন। অভিযুক্ত ধনেশ জেলার আটোয়ারী উপজেলার রাধাঁনগর ইউনিয়নের গোপালজোত এলাকার বাসিন্দা। এদিকে ওই নবজাতকের ব্যাপারে সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শ্রী ধনেশ ওই কিশোরীর আত্মীয়তার সূত্রে তাদের বাড়িতে প্রায়ই যাতায়ার করতো। স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীতে পড়–য়া ওই কিশোরীকে ধনেশ দেড় বছর আগে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এর পরে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ১০ মাস আগে ধর্ষণ করেন। এরপরে ওই কিশোরীরর বাবা মায়ের অজান্তে প্রায় সময় তাকে ধর্ষণ করতো ধনেশ। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সে বিষয়টি ধনেশকে জানায়। ধনেশ ক্ষিপ্ত হয়ে এ বিষয়ে কাউকে জানালে ওই কিশোরীকে প্রাণে মারা হুমকী দেয়। পরে এ বিষয়ে ওই কিশোরী তার পরিবারের কাছে সব গোপন করে ধনেশের পরিবারকে জানায়। এতে ধনেশের পরিবার এ বিষয়ে কাউকে না জানাতে ওই কিশোরীকে হুমকী প্রদান করে। সর্বশেষ ধনেশ ওই কিশোরীকে গত সেপ্টেম্বর আবারো ধর্ষণ করে। এরপরে গত ২২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত তিনটায় ওই কিশোরীর প্রসব বেদনা উঠলে বাড়ির পাশের একটি ধান ক্ষেতের আলে সে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। এসময় ওই কিশোরী লোক লজ্জার ভয়ে নবজাতককে সেখানে রেখে পালিয়ে আসে।
পরে শিশুটির কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন নবজাতককে উদ্ধার করে বোদা থানা পুলিশ-উপজেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করনে। খবর পেয়ে তারা ওই নবজাতককে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের স্ক্যানু বিভাগে ভর্তি করে।
ঘটনার পর থেকেই বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে রহস্য উৎঘাটন করতে তদন্তে নামে। এর পরে গত শনিবার রাতে ওই নবজাতকের পরিবারের সন্ধান মেলে। এরপরে ওই কিশোরী পুলিশকে ঘটনা খুলে বলেন।
এদিকে জেলা প্রশাসনের তত্তাবধায়নে থাকা ওই নবজাতককে দত্তক নিতে অনেকে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। তবে ওই নবজাতকের পরিবারের সন্ধান মেলায় তাকে হস্তান্তরের ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাইদ চৌধুরী।
তিনি জানান, ওই কিশোরীর জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে হাজির করা হয়েছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে তার শারিরিক পরীক্ষা করা হবে। কিশোরীর পরিবার ওই নবজাতকতে নিতে চাইলে আদালতের সিদ্ধান্তক্রমে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া মামলার এজহারভূক্ত আসামীদের ধরতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ওই নবজাতকটি হাসপাতালে আছে। সোমবার সাড়ে তিনটায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা রয়েছে। ইে নবজাতকের স্বজনদের পাওয়ার বিষয়ে পুলিশের কাছে দাপ্তরিকভাবে জানতে পারলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
You cannot copy content of this page