পঞ্চগড় প্রতিনিধি
গ্রামের পরিচিতি নারীদের সাথে রসালো খোশগল্পের মাধ্যেমে গড়ে তোলেন সখ্যতা। তারপরে মোবাইল ফোন কিনে দিয়ে গ্রামের সরলমনা ওই নারীদের সাথে সম্পর্ক গড়েন। সেই সূত্র ধরে চলে ওই বাসায় যাতায়াত। তারপরে নানা প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। এরপরে অনৈতিক সুবিধা হাসিলের চেষ্টা করেন। এমনই অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের শেখগছ এলাকার জাহাঙ্গীর আলম (২৭) নামে এক স্থানীয় যুবকের বিরুদ্ধে। তবে এনিয়ে ভূক্তভোগীদের পরিবারগুলো বিচারের দাবীতে অভিযোগ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ সহ জনপ্রতিনিধিদের দারস্থ হলেও বারবার দেয়া হতো বিচারের আশ্বাস। তবুও মেলেনি কোন প্রতিকার।
এদিকে নারীলোভী ও লম্পট আখ্যা দিয়ে জাহাঙ্গীর নামের ওই যুবকের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন এলাকাবাসী। গেল সোমবার (০৪ মার্চ) দুপুরে তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের শেখগছ এলাকায় ময়নাগুড়ি-ভজনপুর সড়কের দুইপাশে দাড়িয়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন তারা।
মানবন্ধনে রবিউল ইসলাম, সোহেল রানা, আব্দুর রহমান, আকিমুল ইসলাম, রাবেয়া খাতুন, সুইটি আক্তার সহ এলাকাবাসীরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে দেবনগড় ইউনিয়নের শেখগছ এলাকার শতাধিক নারী পুরুষ অংশ নেন।
এসময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীর নামের এক যুবক গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারীদের সাথে পরিচিতির খাতিরে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল কিনে দেন। পরে তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে অনৈতিক সুবিধা হাসিল করেন। এনিয়ে একাধিকবার জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিচার সালিশ করে অর্থদ- করা হলেও তার অপকর্ম কমেনি। সম্প্রতি দেবনগড় ইউনিয়নের শেখগছ এলাকার পাথর শ্রমিক রবিউল ইসলামের স্ত্রীর সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে গোপনে একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন কিনে দেয় জাহাঙ্গীর। রবিউল কাজের সন্ধ্যানে স্থানীয় করতোয়া নদীতে পাথর উত্তোলন করতে গেলে ফাঁকা বাসায় তার স্ত্রীর সাথে গল্পগুজবে মেতে উঠতেন জাহাঙ্গীর। পরে গত ২০ ফেব্রুয়ারী স্ত্রীর হাতে স্মার্ট ফোন দেখে সন্দেহ হয় রবিউলের। এনিয়ে তাদের মাঝে বাকবিত-া শুরু হলে জাহাঙ্গীর মোবাইল কিনে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তার স্ত্রী সুরভী আক্তার। পরে বিষয়টি রবিউল তার শ্বশুরকে জানালে তিনি মেয়েকে নিজ বাসায় নিয়ে যান। পরে এনিয়ে দেবনগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান আলীর বরাবরে গত ২১ ফেব্রুয়ারী সংসার ভাঙ্গা ও পরকীয়ার দায়ে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি আমলে নিয়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যেমে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে পরপর দুইবার নোটিশ করা হলেও হাজির হয়নি সে। পরে তৃতীয় দফার নোটিশে হাজির হলেও পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ব্যস্ত থাকায় সালিশ হয়নি। তবে এরপরে জাহাঙ্গীরকে চূড়ান্ত নোটিশ করা হবে বলে জানা গেছে।
রবিউল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর একজন নারী লোভী, দুশ্চরিত্রের লোক। সে আমার বউকে মোবাইল কিনে দিয়ে আমার সংসার নষ্ট করতে চাইছে। এর আগেও সে অনেকের সংসার নষ্ট করেছে। আমি ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়েও কোন বিচার পাচ্ছিনা। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোলেমান আলী বলেন, আমি বিচার করছিনা বিষয়টি ঠিক নয়। আদতে জাহাঙ্গীর ছেলেটি খুবই খারাপ প্রকৃতির। লম্পট টাইপের। অনেকের সংসার নষ্ট করেছে সে। আমি অভিযোগ পেয়ে তাকে নোটিশ করেছি তিনবার। প্রথমে দুইবার না আসলেও শেষবারে সে এসেছিল সেবার বৈঠকে আমি সময় দিতে পারিনি। আবার তাকে চূড়ান্ত নোটিশ করা হবে। সে না আসলে তাকে ব্যবস্থা নিতে আমি গ্রাম আদালতের মাধ্যেমে জরিমানা করবো। আইনগত ব্যবস্থা নেবো। সেই সাথে উচ্চ আদালতে মামলাটি ফরোয়ার্ড করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে প্রতিবেদন দিবো। তবে এখনো আমার হাতে সময় আছে। একারণে আমি নিজেই চেষ্টা করছি বিষয়টি মীমাংসা করার।
You cannot copy content of this page