বিশেষ প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক শিশু (১৩) কে বলৎকারের অভিযোগে মো. তমিজ উদ্দীন (৫৭) নামে এক সাবেক সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ভোরে তাকে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া তমিজ উদ্দীনের বাড়ি জেলা তেতুলিয়া উৃপজেলার ভজনপুর ভুতিপুকুর এলাকায়। এ ঘটনায় বলৎকারের শিকার ওই শিশুর বাবা রোববার রাতেই পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যেমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, বলৎকারের শিকার ওই শিশুর পিতা রোববার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তার ছেলেকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিষয় নিয়ে পঞ্চগড় রাজনগড় এলাকার তমিজ উদ্দীন নামে এক ব্যাক্তির সাথে কথাবার্তা বলেন। পরে তমিজ উদ্দীন জানান, তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে ক্যাডেট কলেজে পড়ালেখা করে চাকুরী করছে। তিনিও সেনাবাহিনীতে চাকুরী করেছেন। পরে তমিজ ওই শিশুটিকে দেখতে চান। পরে শিশুটির বাবা পঞ্চগড়ে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শিশুটিকে নিয়ে এসে তমিজ উদ্দীনকে দেখালে তিনি জানান, শিশুটির শারিরিক অবস্থা বেশ স্থ’ূলকায়। এ অবস্থায় তাকে ক্যাডেটে ভর্তি করানো যাবেনা। তিনি শিশুটির পিতাকে আরো জানান, তাকে ভর্তি হতে হলে ব্যায়াম করতে হবে। তিনি শিশুটিকে তাদের বাসায় গিয়ে ব্যায়াম শিখিয়ে দিবেন। শিশুটির মা বাসায় না থাকায় তমিজ উদ্দীনকে নিজ বাসায় নিয়ে যেতে রাজি হয়নি শিশুটির বাবা। তিনি এ বিষয়ে শিশুটির বাবাকে জানান, আজকেই শিশুটিকে দেখে যেতে হবে। পরে তমিজ উদ্দীন শিশুটিকে নিয়ে তাদের বাসায় চলে যান। রাতে শিশুটির মা বাবার বাড়ি থেকে ফিরে তাকে কান্নাকাটি করতে দেখলে তিনি শিশুটির কাছে কান্নার কারণ জানতে চান। পরে শিশুটি তার মাকে বিস্তারিত খুলে বলে। এ বিষয়ে শিশুটির বাবাকে বিস্তারিত জানালে তিনি রাতেই শিশুটিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা জানান, তমিজ উদ্দীন নামের ওই ব্যাক্তির সাথে আমার অনেকদিনের পরিচয়। তার সাথে আমার ছেলেকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি নিয়ে কথা বলি। পরে তিনি ব্যায়াম শেখানোর কথা বলে আমার ছেলেকে নিয়ে আমাদের বাসায় নিয়ে যান। পরে তিনি জোরপূর্বক আমার ছেলেকে বলৎকার করেন। পরে তমিজ উদ্দীনকে আসামী করে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমাত উর্দ্দীন মো ফারুক ফিরোজ জানান, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশুটির শারিরিক পরিক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে শিশুটির জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে। এ বিষয়ে আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, বলৎকারের অভিযোগে এক ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যেমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
You cannot copy content of this page