পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় রাতের আঁধারে রোকেয়া বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে হত্যাকারীকে কেউ দেখতে না পেলেও পারিবারিক কলহের জেরেই ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে হাড়িভাসা ইউনিয়নের গইছপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত রোকেয়া ওই এলাকার মোয়াজ্জেন আব্দুল লতিফের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে হঠাৎ বাড়ির উঠোনের এক প্রান্তে গোংড়ানো শব্দ শুনতে পান আব্দুল লতিফের মেয়ে হনুফা বেগম ও ছেলে শরিফুলের স্ত্রী। বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় তারা ভয়ে বাইরে বের হয়নি। কিছুক্ষণ পর শরিফুল বাড়ি ফিরলে তারা শরিফুলকে বিষয়টি জানায়। পরে শরিফুল লাইট নিয়ে রান্না ঘরের সামনে গিয়ে দেখতে পান তার মা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়েছে। রক্তে ভিজে যায় চারপাশ। পরে পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ১১ টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার বিকেলে রংপুরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পঞ্চগড়ে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরেই ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন পরিবারের সদস্য ও পুলিশ।
নিহত রোকেয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম বলেন, আমার বড় চাচা একাব্বর আলী, তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম, দুই ছেলে কাদের ও জলিল ও মেয়ে নাজমা আক্তারের সাথে গত বুধবার রাতে ঝগড়া হয় আমাদের সাথে। তাদের দাবি আমরা নাকি জ্বিনের টাকা পেয়েছি। সেই টাকা থেকে এক লাখ টাকা তাদের ভাগ লাগে। আমরা বার বার তাদের বলছি যে আমরা কোন টাকা পয়সা পাইনি। তারা তা মানছে না। উল্টো আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এমনকি এই বিষয়টি নিয়ে আগামী সোমবার শালিস হওয়ারও কথা ছিলো। আমরা ধারণা করছি তারাই আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি আমার মায়ের হত্যার বিচার চাই।
নিহত রোকেয়ার বড় ভাই মাইনুদ্দিন বলেন, আমার বোনটি সহজ সরল। কারো সাথে কখনো ঝগড়া ঝাটি করতো না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় একাব্বর ও তার পরিবারের লোকজন মিলেই তাকে হত্যা করেছে। আমরা চাই এই হত্যাকা-ের সাথে যারা জড়িত তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করে যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ঘটনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পারিবারিক কলহের জেরে এই হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তারপরও এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে শিগগিরই আমরা এই হত্যাকা-ের রহস্য উন্মোচন করবো। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
You cannot copy content of this page