পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তেঁতুলিয়া উপজেলা খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা কর্মী চাঁন মিয়াকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। এদিকে বাবাকে হত্যার অভিযোগে মামলা করার পর তার দুই ছেলেকেও হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান নিহত চাঁন মিয়ার দুই ছেলে আসলাম উদ্দিন ও আবু বক্কর সিদ্দিক।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের তেলিপাড়া এলাকার আবুল খায়েরের সাথে কানকাটা এলাকার চাঁনমিয়ার ৭০ শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। খায়ের তার লোকজন নিয়ে একাধিকবার চাঁনমিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের উপর হামলা করেছে। আদালতে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে। এমনকি খায়ের তার জমি কবজা করতে চাঁনমিয়ার আপন ভাই মালেক ও তার দুই ছেলেকেও হাত করে নেয়। গত ১৪ জুন খায়ের, তার ভাই কামরুল, চাচাতো ভাই লিটন, চাঁনমিয়ার ভাই আব্দুল মালেক, মালেকের দুই ছেলে রহমান ও আলী, খায়েরের স্বজন সোহেব, রফিকুল ইসলাম, জব্বার, জুলহাস ও মানিকসহ আরও ৮/১০ জন লোক নিয়ে চাঁনমিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মকভাবে জখম হয় চাঁনমিয়া ও তার স্ত্রী আসমা বেগম। চাঁনমিয়াকে মৃত ভেবে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে পরিবারের লোকজন চাঁনমিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল এবং শেষে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জুন বিকেলে মারা যায় চাঁনমিয়া। চাঁনমিয়ার মৃত্যুর পর দিশেহারা হয়ে পড়ে তার পরিবার। পরে গত ১৯ জুন তেঁতুলিয়া মডেল থানায় আবুল খায়েরসহ ১১ জনকে আসামী করে মামলা করে চাঁনমিয়ার বড় ছেলে আসলাম উদ্দিন। এদিকে এ ঘটনায় শুক্রবার আব্দুল জব্বার নামে এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চাঁনমিয়ার ছেলে আসলাম উদ্দিন বলেন, আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। খায়ের ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা করেছে। তার সাথে আমার চাচা মালেক ও তার ছেলেরাও অংশ নেয়। ভাড়াটে সন্ত্রাসী লিটন ও আমার চাচাতো ভাই রহমান আমার বাবার উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়েছে। পরে মৃত ভেবে তার দ্রুত পালিয়ে যায়। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার বাবার মতো আমাদেরও তারা হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমাদের দাবি আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে যেন ফাঁসি দেয়া হয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বাবার হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাই।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি আবু ছায়েম মিয়া বলেন, ওই ঘটনায় আমরা এরমধ্যে একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
You cannot copy content of this page