1. [email protected] : Shafiqul Alam : Shafiqul Alam
  2. [email protected] : Admin user : Admin user
  3. [email protected] : aminul :
November 21, 2024, 7:08 am
শিরোনাম :
পঞ্চগড়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদক বিরোধী আলোচনা সভা পঞ্চগড়ে রাবার ড্যাম পার্কের সৌন্দর্য বর্ধন কাজের উদ্বোধন  পঞ্চগড়ে বিএনপির বর্ধিত সভা পঞ্চগড়ে জেলা পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামুলক কর্মশালা পঞ্চগড় রেলস্টেশনে ফেন্সিডিল বহনকারী তরুণকে গ্রেপ্তার পঞ্চগড়ে অনুমোদনহীন বিদেশি অ্যাপসের অফিস উদ্বোধন করে যৌথবাহিনীর হাতে ৩ জন আটক পঞ্চগড়ে প্রথমবারের মত চারুকলা ও শারিরিক শিক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত পঞ্চগড়ে দুই প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা পঞ্চগড়ে উৎসব মুখর পরিবেশে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের কেন্দ্রীয় কমিটি ও দিনাজপুর অঞ্চলের ইলেকশন ২০২৪ সম্পন্ন  পঞ্চগড়ে বিজিবির চোরাচালান অভিযানে বাঁধা ও অপপ্রচারের অভিযোগ 

মওলানা ভাসানী : মিলিত সংগ্রামের নাম

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, November 21, 2017
  • 2364 Time View
ফাইল ছবি

আজীবন আপোসহীন, সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম আর জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান সাধক উপমহাদেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিকের মধ্যে অতীব বৈশিষ্ট্য দিক হচ্ছে যে প্রতিক্রিয়াশীল সমাজ ও পরিবেশের মাঝে তাঁর রাজনীতি সঠিকভাবে প্রয়োগে পিছ পা হতেন না। মওলানা ভাসানী এমনই একজন জাতীয় নেতা ছিলেন যার জীবন আলোচনা বাংলাদেশের অসমাপ্ত জাতীয় মুক্তি ও গণমুক্তি সংগ্রাম এবং সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইকে শানিত ও শক্তিশালী করতে পারে।

দরিদ্র জনগোষ্ঠির জীবন মান উন্নয়ন ও সার্বিক সমাজ প্রগতি অর্জনে তাঁর প্রচেষ্টা ছিল নিরলস। মওলানা ভাসানী আজীবন জমিদার-জোতদার-মহাজন-সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির দালালদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করেছেন, উপমহাদেশের আজাদী সংগ্রামে বৃটিশদের বিরুদ্ধে খেলাফত আন্দোলন, মুসলিম লীগ, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামনের কাতারে থেকে লড়াই সংগ্রাম করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আওয়ামী মুসলিম লীগ-আওয়ামী লীগ-ন্যাপ’র মত রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা, কৃষকদের অধিকার আদায়ে কৃষক সমিতি গঠন ও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।

আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দেশপ্রেমিক মহানায়ক হচ্ছেন মজলুম জননেতা। প্রতিটি সমাজ তার ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই জন্ম দেয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আমাদের সমাজে এমনই একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান হচ্ছেন মওলানা ভাসানী

তিনি আজীবন লড়াই করেছেন সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ, উপনিবেশিকতা, সাম্প্রদায়িকতা, নব-সাম্রাজ্যবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা প্রতিষ্ঠার চক্রান্তের বিরুদ্ধে, সংগ্রাম করেছেন পাকিস্তানী আধা উপনেশিকতাবাদের কালো থাবা থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। বিশ্ব শান্তির জন্য তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা, শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ধর্মান্ধতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মুখোশ উম্মোচন- কোথায় নেই মওলানা ভাসানী।

অন্যদিকে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, সশস্র মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন, জনতার অধিকার আদায়, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের পতাকা-মানচিত্র রক্ষা, ভারতীয় পানি-সীমান্ত-সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনতার সংগ্রাম-আন্দোলনকে সংগঠিত করেছেন তিনি। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী কেবলমাত্র একটি নাম নয়, এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি সমস্ত রাজনৈতিক মতপার্থক্যের গণ্ডিকে অতিক্রম করে আপামর জনমানুষের প্রাণের নিকটতম স্থানে পৌঁছেছিলেন। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে রাজনৈতিক সভা মঞ্চে তিনি ছিলেন অনন্য সাধারণ। শ্রোতার বুকে আগুন জ্বালিয়ে আন্দোলনে উজ্জীবিত করার জাদুকরি ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তিনি।

জনগণের প্রতি মায়ের মমতা সিক্ত মনের অধিকারী মওলানা ভাসানী শুধু জনগণের জন্যই রাজা-মহারাজার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, শোষক-জোতদারের ধানের গোলা লুট করেছিলেন, বৃটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠন করেছেন, ৫৪ সালের মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটিয়েছেন, ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলার মাধ্যমে বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্র শিখিয়েছেন- স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ৬৯-এর গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা লাভের পর আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা সংরক্ষণে আপোসহীন চারণের মতো জীবনের মেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজেকে নিঃশেষে নিবেদন করেছেন। রাজনীতিবিদ হয়েও তাই মানবতার এই মহান শিল্পী জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জনগণের সেবায় নিজের জীবন নিঃশেষে ব্যয় করে গেছেন, শিক্ষকের মতো নির্দেশ দিয়ে গেছেন।

প্রায় পৌনে এক শতাব্দি ধরে উপ-মহাদেশের নিপীড়িত, নির্যাতিত, অবহেলিত, অত্যাচারিত মানুষকে আশা-আকাঙ্খার বাণী শুনিয়েছেন, আপোসহীন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শাসকের ভ্রুকুটি, শত্রুর চোখ রাঙানি, জেলজুলুমের মুখে অকম্পিত হৃদয়ের বিশাল মহিরুহের মতোই যিনি এদেশের মানুষকে অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার বাণী শুনিয়েছেন তিনি হলেন অগ্নিপুরুষ মওলানা ভাসানী। আপোসহীন সংগ্রামের অগ্রদূত হিসেবে জাতিকে দিয়েছেন ৪০ দশকে বৃটিশ বিরোধী আজাদী আন্দোলন, ৫০ দশক ও ৬০ দশকে সর্বশেষ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্য রক্ষায় বারংবার তিনি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর সচেতনা ও সদাজাগ্রত কণ্ঠ বিভিন্ন সময়ের ক্রান্তিলগ্নে আমাদের আকাঙ্খিত পথের নিশানাই দেখিয়েছেন। তিনি এমনই এক সময় আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন যখন আমরা ইতিহাসের ক্রান্তিলগ্নের মুখোমুখি। সীমান্তে গোলোযোগ সৃষ্টি, ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে একতরফা গঙ্গা নদীর পানি প্রত্যাহারের মাধ্যমে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তেমনই সময় মওলানা ভাসানীর প্রয়োজনীয়তা ছিল সবচাইতে বেশি।

 

তাঁর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় জীবন কাহিনী কথার মালা গাঁথিয়ে শেষ করা যাবে না। সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে শৈশবেই পিতৃহীন হন তিনি। অল্প বয়সেই বোগদাদের আত্মাধিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা শাহ নাসিরউদ্দিন বোগদাদী (রহঃ) এর সংস্পর্শে এসে তিনি নতুন জীবনবোধে অনুপ্রাণিত হন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের আসামে চলে যান। সেখানে তখন অসমীয় ও বাঙালি জনগোষ্ঠির মধ্যে খারাপ সম্পর্ক যাচ্ছিল। বাঙালি জনগোষ্ঠির অধিকার ছিনতাই করছিল শাসকগোষ্ঠি। আসামে গমন করে মওলানা ভাসানী লাইন প্রথার নিষ্পেষণে জর্জরিত বাঙালিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। তারই প্রেরণায় ও সংগ্রামী জীবনাদর্শের ডাকে নিপীড়িত জনতার মাঝে বিদ্রোহের অগ্নি জ্বলে ওঠে। কেপে উঠে বৃটিশ সরকারের ভিত। সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করেন। বৃটিশ শাসনের অবসানের মাধ্যমে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ইতিহাসে যাদের নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত লেখা থাকার যোগ্য মওলানা ভাসানী তাদের মধ্যেই পড়েন। মূলতঃ তাঁর সংগ্রামী আন্দোলনের কারণেই সিলেট পাকিস্তানের অন্তর্গত হয়েছে। আজকে যা বাংলাদেশের অংশ।

ভাসান চরের ঐতিহাসিক সম্মেলনে মুগ্ধ আসামের নির্যাতিত নিপীড়িত জনতা তাকে ভাসানী উপরাধিতে অলংকৃত করেন। বৃটিশ কারাগার থেকে মুক্ত হয়েই মওলানা ভাসানী পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। শুরু হয় তার রাজনৈতিক জীবনের নতুন অধ্যায়। সত্য প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠির অন্যায় আচরণের প্রতিবাদে ও বাঙালি জনগোষ্ঠির অধিকার আদায়ে সংগ্রামের সূচনা করেন এবং প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগ যা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হলেন মওলানা ভাসানী। স্বায়ত্বশাসন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সাথে মতবিরোধ ঘটলে তিনি ১৯৫৭ সালে ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের আহ্বান করেন এবং সেখান থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনগোষ্ঠির অধিকার আদায় ও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ গঠন করেন।

৫২‘র ভাষা আন্দোলন, ৫৪‘র যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন ও স্বেচ্ছাচার বিরোধী ২১দফা সংগ্রাম, ৬২’ শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯’র আইয়ূব বিরোধী গণআন্দোলন, ৭১’এ মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৭২-৭৫ আওয়ামী দুঃশাসন বিরোধী সংগ্রাম, ৭৬’এ ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফারাক্কা লংমার্চে বলিষ্ট নেতৃত্ব দিয়ে লক্ষ কোটি মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। বস্তুত সুদীর্ঘ ৭৫ বছরের অধিককালে জাতীয় জীবনের এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নেই যেখানে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা নেই।

মওলানা ভাসানী প্রগতিশীল এবং শোষণমুক্ত সমাজ ধারার সাথে ধর্মের সুমহান আদর্শের রাখিবন্ধন করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষের মুক্তি ও কল্যাণ সাধনের। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ৯৬ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু অপ্রত্যাশিত না হলেও আকস্মিক ছিল। লক্ষ-কোটি মানুষের ভালবাসা নিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, প্রকৃত পক্ষে তিনি মৃত্যুবরণ করেননি, তিনি চির চিরঞ্জীব।

বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ নিমজ্জমান। বাংলাদেশকে পরিপূর্ণ ভারতের বাজারে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশের উপর চলছে ভারতীয় আধিপত্যবাদীর পুঁজির আগ্রাসন। একই সাথে রাজনৈতিক আগ্রাসনের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানকালে একটা দেশ ও জাতিকে পদানত ও অধীনতাপাশে আবদ্ধ করা হয় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে, সামরিক আগ্রাসন দিয়ে নয়। এমনই অধীনতায় প্রক্রিয়া বাংলাদেশে আজ আবারও চলছে আওয়ামী লীগের শাসনামলে, যেমনটি হয়েছিল স্বাধীনতার পরবর্তী শাসনামলে। এমনই অবস্থায় বাংলাদেশের মানুষ আজ ভারতীয় সম্প্রসারনবাদের অধীনতা ও সকল প্রকার বিদেশি শোষণ-আধিপত্য মুক্ত হয়ে পরিপূর্ণ জাতীয় মুক্তি ও জনগণের মুক্তি অর্জনের সংগ্রামে রত। এ সংগ্রামে দেশের জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানীর সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা ও প্রেরণা গ্রহণ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দেশপ্রেমিক মহানায়ক হচ্ছেন মজলুম জননেতা। প্রতিটি সমাজ তার ঐতিহাসিক প্রয়োজনেই জন্ম দেয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আমাদের সমাজে এমনই একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান হচ্ছেন মওলানা ভাসানী। মজলুম জননেতা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে দলবদল করেছন, তৈরি করেছেন দল। কিন্তু, তার আদর্শ কখনো বদল করেননি। তাঁর স্বপ্ন সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদমুক্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে এতটুকু বিচ্যুত হননি। মজলুম জননেতাকে শ্রদ্ধা জানাবার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইকে এগিয়ে নেয়া এবং সকল দেশপ্রেমিক শক্তির সৃদৃঢ় ঐক্য রচনা করা ও রক্ষা করা।

বাংলাদেশে তিনি সম্প্রসারণবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যের রাজনীতির সার্থক প্রয়োগ করেছেন। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, স্রোতের বিপরীতে দাঁড়াবার সাহস, নির্যাতনের মুখেও অবিচলতা মানুষকে মৃত্যুঞ্জয়ী করে। মওলানা ভাসানী তেমনই একজন মানুষ। মওলানা ভাসানী সম্পর্কে চূড়ান্ত রায় দেয়ার সময় এখন তো নয়ই, অদূর ভবিষ্যতে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। এই ভূখণ্ডের মানুষের আরো অনেক উত্থান-পতনের পরই শুধু অনাগত গবেষকদের পক্ষেই একটি আপাতত রায় দেয়া সম্ভব হতে পারে। এই জাতি আরো অনেক দুর্ভোগ পোহাবে, তারপরই শুধু উপলব্ধি করা সহজ হবে তাঁর কালে মওলানা ভাসানী অভ্রান্ত ছিলেন- না বিরোধী ও প্রতিপক্ষরা সঠিক ছিলেন।

পরিশেষে ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানীর অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে চাই ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মজলুম জননেতা প্রদর্শিত পথ ভুলে গেলে কিংবা সেই পথ থেকে বিচ্যূত হলে জাতি হিসেবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র রক্ষায় মজলুম জননেতার প্রদর্শিত পথে পরিচালিত হতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | PanchagarhNews.com পঞ্চগড়ে প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল
Tech supported by Amar Uddog Limited

You cannot copy content of this page