পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সহ দেশের ৬টি চিনিকল চালু, চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক কর্মচারীদের ছাটাই বন্ধ ও মৌসুমি শ্রমিক কর্মকর্তাদের বেতন মজুরী প্রদানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পঞ্চগড় চিনিকলের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় চিনিকলের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয় সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব আলম বুলেট, সহ সভাপতি মো. শাহীন, প্রচার সম্পাদক আকবর আলী ও প্রবীণ কর্মচারী আব্দুল লতিফ বক্তব্য দেন।
এসময় লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী আমাদের মা। তিনি বলেছিলেন ঘরে ঘরে চাকরি দিবেন, সেখানে চাকরি থেকে কর্মীদের ছাটাই করতে পারেন না চিনিকল কর্র্তৃপক্ষ। পঞ্চগড় চিনিকলে ২৪৮ জন শ্রমিক চুক্তিভিত্তিতে কাজ করেন। ছয়টি চিনিকলে চুক্তিভিক্তিক শ্রমিকের সংখ্যা ২ হাজার ৮৬৮ জন। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন বন্ধ চিনিকলগুলোর কোন কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে ছাটাই করা হবে না বলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছিল। আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য শিল্প সচিব ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন। সেখানে পঞ্চগড় চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই নির্দেশনা না মেনে ইক্ষু বিভাগের সকল চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের গত ৩১ মে থেকে অব্যাহতির অফিস আদেশ প্রদান করেছেন। আমরা এখানে দীর্ঘ ১৫ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে চাকুরী করে আসছি। এভাবে হঠাৎ করে প্রধান কার্যালয়ের কোন আদেশ না থাকলেও চিনিকল কর্তৃপক্ষ আমাদের ছাটাইয়ের অনিয়মতান্ত্রীকভাবে অফিস আদেশ জারী করেছে। এভাবে ছাটাই করলে ইক্ষু বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মহীন হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপন করতে হবে। তারা অভিযোগ করে বলেন, ছাটাইকৃত কর্মচারীদের কাছ থেকে চিনিকলের দুইজন কর্মকর্তা অবৈধভাবে টাকা দাবি করছে। তাহলে তারা নাকি অফিস আদেশ প্রত্যাহার করে নেবে। তাদের চাহিদামত অর্থ দেয়ার আমাদের কোন সামর্থ নেই। তারা অবিলম্বে স্থায়ী চুক্তিভিত্তিক সেন্টারগার্ড কাম স্কেলম্যানদের অব্যাহতি দেওয়ার আদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানান। অন্যথায় আগামী ২৬ শে জুনের পর থেকে ধাপে ধাপে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) মো ইউসুফ আলী জানান, ২০০৭ সালে চিনিশিল্প কর্পোরেশনের তিনজন কর্মকর্তা পঞ্চগড়ে আসেন। পরে এক বছরের জন্য এদের নিয়োগ দেয়া হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে। পঞ্চগড় চিনিকলে মৌসুমী শ্রমিক ছিল তিন শতাধিক এবং কাজের বিনিময়ে মুজুরী ভিত্তিতে ২৫০ জন কাজ করতো। বর্তমানে যেহেতু চিনিকল বন্ধ রয়েছে এবং কোন কাজ নেই তাই কাজের বিনিময়ে মুজুরী ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকদের ধাপে ধাপে ছাঁটাই করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ১০০ জন, এবছরের এপ্রিলে ৫০ জন এবং ৩১ শে মে ৭০ জনের মত শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। বাকী কিছু নিরাপত্তা প্রহরী বা কর্মী আছে তাদের কাজ আছে বিধায় তাদের রাখা হয়েছে। তাদের কাজ কাজ না থাকলে তাদেরও রাখা হবেনা। সে হিসেবে এখন এই মিলে আর চুক্তি ভিত্তিক কোন শ্রমিক নেই। তবে স্থায়ী কাউকে ছাটাই করা হয়নি বা হচ্ছেনা।
You cannot copy content of this page