পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় বাড়িতে দেহ ব্যবসা ও মাদক রাখার অভিযোগে ৩ নারী সহ ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের মালাদাম এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছে বিপুল পরিমাণে যৌন উত্তেজক পন্য, কনডম, যৌনতা সম্পর্কিত বই এবং ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আইন ও অবৈধ দেহ ব্যবসা পরিচালনার দায়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। পরে ওই দুটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যেমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের গেদীপাড়া গ্রামের কালকাটু বর্মনের ছেলে পরেশ চন্দ্র রায় (৪৩), উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের ইউসুফ আলীর মেয়ে মরিয়ম আক্তার মেরি (২৩), তার বউ হালিমা বেওয়া (৪৮), বোদা উপজেলার লাঙলগ্রাম এলাকার রজনী কুমারের ছেলে জয়ন্ত কুমার (২৬), সল্টু বর্মনের ছেলে কৃষ্ণ র্বমণ(২৮), সাতখামার এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান (২৪), দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার মন্পলপাড়া এলাকার তমিজ উদ্দীনের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন (২৩) এবং ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সনগাঁও গ্রামের সাদেকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাজুমল হোসেন (২৬), ।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনগন মেরি ও পরেশের বাসায় র্দীঘদিন ধরে অবৈধ দেহ ব্যবসা ও লোক আনাগোনা দেখে প্রতিবাদ করে আসছিলো। তাতেও তারা তোয়াক্কা না করে এই অবৈধ দেহব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। সাথে বাড়ীতে নোশার আসরও জমাতো তারা। মঙ্গলবার(২৮সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দেহ ব্যবসা পরিচালনার উদ্দ্যেশে মেরি ও পরেশ নামে দুইজন সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক নারীকে দেহ ব্যবসার উদ্দ্যেশে ভাড়া করে নিয়ে আসে। ঘটনার দিন ওই বাড়ীতে লোকজনের আনাগোনা দেখে স্থানীয়রা বাড়িটি ঘেরাও করে। এ সময় সেখানে হাজারো গ্রামবাসী লোকজন জড়ো হয়। দীর্ঘ দিনের ক্ষোভে জনগন বিক্ষুব্ধ হয়ে পরেশ ও মেরির বিচারের দাবীতে আন্দোলন করতে থাকে তারা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে তিন নারী সহ ৮ জনকে আটক করে। এসময় ওই বাসাটি থেকে বিপুল পরিমাণে যৌন উত্তেজক পন্য, কনডম, যৌনতা সম্পর্কিত বই এবং ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মো. ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রাকিবুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়াটার) মো.আলমগীর হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মিয়া সহ থানা ও ডিবি পলিশের অর্ধশতাধিক সদস্য। ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের পরেশ চন্দ্র রায় ও মরিয়ম আক্তার মেরি তাদের বাড়ীতে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী এনে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করে আসছিলো। এদিকে মরিয়ম আক্তার মেরি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে খিস্ট্রার্ণ ধর্ম গ্রহন করে নাম পরিবর্তন করে।পরেশ ও মেরি নিজেদের স্বামী -স্ত্রী হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেয়। স্থানীয় জনগন র্দীঘদিন ধরে এ অবৈধ দেহ ব্যবসা ও লোক আনাগোনা দেখে প্রতিবাদ করে আসছিলো। তাতেও তারা তোয়াক্কা না করে এই অবৈধ দেহব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো। সাথে বাড়ীতে নোশার আসরও জমাতো তারা। ঘটনার দিন ওই বাড়ীতে লোকজনের আনাগোনা দেখে স্থানীয়রা বাড়িটি ঘেরাও করে। এ সময় সেখানে শত শত লোকজন জড়ো হয়। দীর্ঘ দিনের ক্ষোভে জনগন বিক্ষুব্ধ ও মারমুখি হয়ে ওঠে। পুলিশ তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
পঞ্চগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পরেশ ও মেরির বিরুদ্ধে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। অপর আসামীদের বিরুদ্ধে অবৈধ দেহ ব্যবসা পরিচালনার দায়ে ২৯০ ধারায় অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে তাদের আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
You cannot copy content of this page