পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আদালত চত্বরে প্রবেশ করে মারামারি, সরকারি কাজে বাধাদান এবং সরকারি কর্মচারীকে হুমকিসহ আদালতের বিচারিক পরিবেশের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলায় পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলনের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার দুপুরে ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
মিলন এই মামলায় উচ্চ আদালতের রায়ে ৬ সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। সোমবার ওই মামলায় তার জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পন করে জামিন চাইলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলার অন্য ৬ আসামী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ে জামিনে রয়েছেন। মিলন এই মামলার প্রধান আসামী ছিলেন। তিনি বর্তমানে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১১ই নভেম্বর ওই ইউপিতে ব্যালটের মাধ্যেমে ভোট গ্রহণ গ্রহনের কথা রয়েছে।
ওই মামলার অন্য আসামীরা হলেন জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের বালুবাড়ি এলাকার আবদুল হামিদ (৪০), একই উপজেলার বাইনগঞ্জ এলাকার নুর ইসলাম (৩৮), পাগলীডাঙ্গী এলাকার সেলিম রানা (২৫), জায়গীর জোত এলাকার আজিজার রহমান (৪৭), ঝাঁড়ুয়াপাড়া এলাকার ফারুক হোসেন (২৫) ও সাইদুল ইসলাম (৩৮)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের বালুবাড়ি এলাকার আবদুল হামিদ নামে এক ব্যক্তির সাথে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দায়ের করা একটি মামলায় গত ১৬ই সেপ্টেম্বর বাংলাবান্ধা ইউপির চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন সহ ১৪ জন আসামি আদালতে জামিন নিতে আসেন। তাঁরা আইনজীবী নিয়ে আদালতের জিআরওর কাছে জামিন আবেদন জমা দিয়ে কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন।
এ সময় মামলার বাদী আবদুল হামিদ তাঁর আইনজীবী নিয়ে অফিসকক্ষে প্রবেশ করছিলেন। কক্ষের দরজার সামনে বাদী-বিবাদী পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। পরে উভয় পক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের নিয়ে চলে যাওয়ার সময় কুদরত-ই-খুদা মিলন আদালতের নেজারত শাখায় কর্মরত ক্যাশিয়ার সুমনকে মারার জন্য তেড়ে আসেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই মামলার বাদী আবদুল হামিদ আদালতের ক্যান্টিনে চা-নাশতা খেতে গেলে মিলনের লোকজন হামিদকে মারধর শুরু করেন। এ সময় তাঁদের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আদালতের নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা ক্যান্টিনে গিয়ে মারামারি থামিয়ে আবদুল হামিদ ও নুর ইসলামকে আটক করেন। পরে আদালত পুলিশ পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়। সদর থানার পুলিশ আদালতের বাইরে অভিযান চালিয়ে অপর চারজনকে আটক করে।
এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া আমলি আদালতের জিআরও এবং আদালত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মজিবর রহমান সাত জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা চার পাঁচজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। বেআইনিভাবে আদালত চত্বরে প্রবেশ করে মারামারি, সরকারি কাজে বাধাদান এবং সরকারি কর্মচারীকে বলপ্রয়োগের হুমকিসহ আদালতের বিচারিক পরিবেশের শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর আটক ছয় জনকে ওই দিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
You cannot copy content of this page