দুই শতাংশ জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ার পর কর্মসংস্থানের জন্য এবার একটি বাটারী চালিত ভান উপহার পেলেন খতিবর রহমান। মঙ্গলবার দুপুরে কালেক্টরেট চত্বরে তার কাছে উপহারের একটি বাটারী চালিত ভ্যানের চাবী তুলে দেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম। মাথা গোজার ঠাঁই পাওয়ার পর কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খতিবর। এসময় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম তাকে বুকে জড়িয়ে নেন। ভ্যান প্রদানের সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দীপঙ্কর রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
খতিবর রহমানের বাড়ি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া গ্রামে। নিজের কোন ঘর না থাকায় ঢাকার একটি বস্তিতে ঘর ভাড়া নিয়ে সাত বছর ধরে রিকসা চালাতেন তিনি। নিজ জেলা পঞ্চগড়ে কোন বাড়ি না থাকায় তিনি জন্মস্থানে ফিরতেও পারতেন না। গত ২৭ জুলাই পঞ্চগড় জেলাকে শতভাগ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণার সময় তাকেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমিসহ একক গৃহ দেওয়া হয়। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণাকালে খতিবর রহমানকে বলেন, ‘আমরা তো কিছু ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করি, ট্রেনিং দেই, ঢাকায় রিকসা না চালিয়েও বাড়ির পাশে কাজ করতে পারবেন। ওখানে স্কুল আছে, সেখানে ছেলে মেয়েদের পড়াতে পারবেন’। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক তিনি পঞ্চগড়েই ছেলে মেয়েদের পড়াশোনাসহ বরাদ্দকৃত একক গৃহে অবস্থান করছেন। তিনি আর ঢাকায় যাননি।তবে হাতে কোন কাজ না থাকায় তিনি বেকায়দায় পড়ে যান। নিজের বাড়িতে থেকে তার কর্মসংস্থানের জন্য আশ্রয়ন পরবর্তী পুনর্বাসনের আওতায় তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রদান করা হলো একটি বাটারী চালিত ভ্যান।
খতিবর রহমান বলেন, আমার জমিও ছিল না, কোন ঘরও ছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে জমিসহ ঘর উপহার দিয়েছেন। আমার স্ত্রীকে একটি সেলাই মেশিন দিয়েছেন। আজ একটি বাটারী চালিত ভ্যান পেলাম। এখন আমাকে রিকসা চালাতে আর ঢাকা যেতে হবে না। ভ্যান চালিয়েই আমি সংসার পরিচালনা করতে পারবো। আমি আর কিছু চাইনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
খতিবরের স্ত্রী আজেদা খাতুন বলেন, আমার স্বামী অনেক কষ্ট করে সংসার চালান। আমি যতটুকু পারি হেল্প করি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘর দিয়েছেন। আমাকে একটি সেলাই মেশিন দিয়েছেন। আমার স্বামীকে এখন একটি ব্যাটারী চালিত ভ্যান দিলেন। এখন আর আমাদের সংসারে কোন কষ্ট থাকবেনা। আমরা ভালভাবে চলতে পারবো। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ভ্যান পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। মহান আল্লাহ তাঁকে দীর্ঘ হায়াত দান করুন। দেশের মানুষের জন্য তিনি যেন আরো ভাল কাজ করে যেতে পারেন। আমাদের মত গরীব মানুষদের সহযোগিতা করতে পারেন।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনায় জেলার পাঁচ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে তিন পর্যায়ে চার হাজার ৮৫০ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নির্বাচন করে জমি ও একক গৃহ প্রদানপূর্বক ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী পঞ্চগড় জেলাকে প্রথম ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্তি জেলা হিসেবে ঘোষণা দেন। ওইদিন রিকসা চালক খতিবরকে নিজ বাড়িতে থেকে কাজ করার নির্দেশনা দেন। সে মোতাবেক আশ্রয়ন পরবর্তী পুনর্বাসনের আওতায় তাকে একটি নতুন একটি বাটারী চালিত ভ্যান প্রদান করা হল। আশা করছি তিনি এই ভ্যান দিয়ে আয় রোজগার করে সংসার ভালভাবে চালাতে পারবেন।।
You cannot copy content of this page