1. [email protected] : Shafiqul Alam : Shafiqul Alam
  2. [email protected] : Admin user : Admin user
  3. [email protected] : aminul :
December 26, 2024, 10:21 pm

পঞ্চগড়ে রাতের আধারে মন্দির ঘর তুলে জমি দখলের অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : Friday, May 26, 2023
  • 294 Time View

পঞ্চগড় প্রতিবেদক
পঞ্চগড়ে রাতের আধাঁরে জমি দখল করে মন্দির ঘর তুলে বসানো হয়েছে সনাতন ধমার্লম্বীদের কালী প্রতিমা। সেই সাথে একই জমিতে একটি ঘর ও একটি টিনের চাল তোলা হয়েছে। পাশেই একটি লটকন গাছের নিচে তৈরী করা হয়েছে মাঁচা। সেই ঘরে রাতে ও মাঁচায় দিনে অবস্ান করছেন জমি দখলকারীরা। গত শনিবার (২০মে) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের তেপুকুরিয়া বিউটিপাড়া এলাকায়। এদিকে ঘটনার ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও কোন প্রতিকার পাননি ভূক্তভোগী আব্দুল আউয়াল (৫১)। প্রতিকার পেতে ইউপি চেয়ারম্যান, বোদা থানাতে দিয়েছেন লিখিত অভিযোগ। তবে দিনরাত স্ানীয় জনপ্রতিনিধি সহ ওই দপ্তর গুলোতে ঘুরে কোন সুরাহা পাচ্ছেন না ভূক্তভোগী অসহায় দিনমজুর আউয়াল।
অভিযোগ উঠেছে, স্ানীয় কিছু লোকজনের উস্কানিতে পূর্বপুরুষের বিক্রি করা জমি আবারো দখলে নিয়েছেন স্ানীয় রাজেন্দ্র রায় (৫২), তার ছোট ভাই সুবাস চন্দ্র রায় (৪৫) সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা। তবে জমি দখলকারীরা বলছেন, ওই জমির সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারলে আব্দুল আউয়ালকে জমি ছেড়ে দেবেন তারা। তবে আব্দুল আউয়ালের অভিযোগ গায়ের জোরে ও ধর্মকে ব্যবহার করে স্ানীয় কিছু মানুষের উস্কানিতে তার কষ্টের টাকায় কেনা জমিতে রাতের আধাঁরে মন্দির ও ঘর তোলা হয়েছে। দখলকারীদের স্ানীয় ইউপি সদস্যর ডাকা সালিশে ও থানায় ডাকা সালিশে কখনোই হাজির করা যায়নি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের তেপুকুরিয়া বিউটিপাড়া এলাকার অসহায় দিনমজুর আব্দুল আউয়াল প্রতিবেশি আইজুল ইসলামের কাছ থেকে ২০২২ সালে কেনেন ২২ শতক জমি। জমি কেনার পরে চাষাবাদ করতে যেতেই বাধাঁ দেন রাজেন্দ্র রায়, তার ছোট ভাই সুবাস চন্দ্র রায় সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরে এনিয়ে স্ানীয় ইউপি সদস্য ও বোদা থানায় সালিশ ডাকা হলেও প্রতিবারই নানা অজুহাতে সালিশে অনুপস্তি ছিলেন রাজেন্দ্র রায় সহ তাদের পরিবারের লোকজন। ফলে দীর্ঘ দিনেও হয়নি জমি নিয়ে কোন ফায়সালা। এরই মাঝে গত শনিবার (২০মে) রাতের আধাঁরে মন্দির ও ঘর তোলেন রাজেন্দ্ররা। এর পর সেখানেই বিদ্যুৎ সংযোগ টেনে অস্ায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন তারা।
ভূক্তভোগী আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি কষ্টের টাকায় ২২ শতক জমি কিনেছি প্রতিবেশি আইজুলের কাছ থেকে। তিনি ১০ থেকে ১২ বছর আগে রাজেন্দ্রের কাকা শিবেন রায়, পার্বতী রায় ও অশুনি রায়ের কাছ থেকে কিনেছেন। এতদিন তিনি (আইজুল) ফসল আবাদ করছিলেন। আমি কেনার পরই হঠাৎ তারা আমার জমি দখলে নিল। তাও আবার ধর্মকে ব্যবহার করে। এখন আমিই আমার কেনা জমিতে যেতে পারছিনা। অথচ আইজুলের কাছে জমি থাকাকালীন তারা জমি দখল করতে আসেনি। স্ানীয় কেদার নামে এক ব্যাক্তি সহ কয়েকজন তাদের ইন্ধন দিয়েছে জমি দখল করতে। এখন জমি দখলে রাখতেও তাদের নানা পরামর্শ দিচ্ছে। আমি বিচার চেয়ে সকলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্ নায্য বিচার পাচ্ছিনা। আমি আমরা জমি ফেরত চাই। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই।
আউয়ালের বড় ভাই দুলাল উদ্দীন বলেন, আমার ভাই গত বছরই ২২ শতক জমি কেনে প্রতিবেশি আইজুলের কাছ থেকে। তবে রাজেন্দ্র সহ কয়েকজন দাবী করছে জমি তাদের। যদিও আইজুল ওই জমি রাজেন্দ্রদের পূর্বপুরুষদের কাছে কিনেছে। এতদিন তারা দখল করতে আসেনি। কিন্ হঠাৎ করে তারা আমার অসহায় ভাইটির জমি দখল করে নিল। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
স্ানীয় আব্দুল হালিম বলেন, আউয়াল নামে এক ব্যাক্তি বেশকিছুদিন আগে জমি কিনেছেন তারই প্রতিবেশি আইজুলের কাছ থেকে। আইজুল কিনেছে রাজেন্দ্রের তিনজন কাকার কাছ থেকে। কিন্ চাষাবাদ করতে গেলে তিনি বাঁধার শিকার হন। আমি দেখেছি দীর্ঘদিন আইজুল ওই জমি তাদের কাছে কিনে চাষাবাদ করলো। তাকে বাঁধা দিলনা তারা। আউয়াল কেনার পরই চাষাবাদে যেতেই এই অসহায় মানুষটাকে বিপদে ফেলতে জমি দখল করে নিয়েছে তারা। আমার অনুরোধ এই মানুষটি যেন সঠিক বিচার পান।
অভিযুক্ত রাজেন্দ্র রায় বলেন, এই জমির মুল মালিক আমার দাদী শরমেশ্বরী রানী। তার কিছু অংশ আমার তিন কাকারা পাওয়ার পরে বিক্রি করে দেয়। কিন্ আমরা বাবার অংশ তো বিক্রি হয়নি। আমরা যখন জানতে পারি যে এই জমি আমাদের তখন থেকে আমরা দাবী শুরু করি জমির ব্যাপারে। আমরা ২০০৮ সালে জমি জরিপে অভিযোগ দিয়েছিলাম। তখন থেকে জমিটা পাচ্ছিলাম না। এবার আমরা দখলে নিয়েছি। এটা আমাদের পূর্ব পুরুষের ভিটা। এখানে মন্দির আগে থেকে ছিল। আমরা যখন এখান থেকে চলে যাই তখন মন্দির নিয়ে যাই। আমার এখানে আসছি মন্দির নিয়ে আসছি। যদি তারা সঠিক কাগজ দেখাতে পারে তাহলে আমরা জমি ছেড়ে দিবো।
বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, আমি বিষয়টি সুরাহা করতে স্ানীয় ইউপি সদস্য কাব্যভূষণ রায়কে প্রধান করে ৫ সদস্যর একটি কমিটি করে দিয়েছি। ওই কমিটি কয়েকবার শালিস ডেকেছে। কিন্ বিবাদী পক্ষ হাজির হয়নি। তবে কমিটি যদি আমাকে প্রতিবেদন দেয় যে তারা বিষয়টি সুরাহা করতে পারলোনা তখন আমি বিষয়টি দেখবো। এদিকে এর মাঝে একদিন শুনি জমি দখলে নিতে নাকি রাজেন্দ্ররা মন্দির ও ঘর তুলেছে। জমি পাবে নাকি পাবেনা সেটা কাগজপত্র দেখে ঠিক করা হবে। কিন্ ধর্মকে ব্যবহার করে জমি দখল করা এটা রাজেন্দ্ররা ঠিক করেনি।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় রায় বলেন, আমাদের কাছে আউয়াল নামে এক ব্যাক্তি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমাদের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়েছিলেন। সরেজমিনে দেখেছেন। তবে দুইপক্ষই আমাদের আশ্বস্ত করেছিল যে তারা জমিতে যাবেনা। কোন ধরনের বিশৃংখলা সৃষ্টি করবেনা। আসলে জমি নিয়ে তো আমরা কোন বিচার করতে পারিনা। এটা ইউপি চেয়ারম্যান বা আদালতের বিষয়। আমরা দেখছি যেন আইন শৃংখলার অবনতি না হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | PanchagarhNews.com পঞ্চগড়ে প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল
Tech supported by Amar Uddog Limited

You cannot copy content of this page